আমাদের মধ্যে এরকম অনেকেই রয়েছেন, যারা কিনা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান।
আর আপনিও যদি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম বিলেটেড যাবতীয় তথ্য জেনে নিতে চান এবং জেনে নিতে চান, ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম কি? তাহলে এই আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
ব্যাংক একাউন্ট কি?
এক কথায় বলতে গেলে এটা বলতে হবে আপনি যদি যেকোনো একটি ব্যাংকের অধীনে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন, তাহলে সেটিকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বলে আখ্যায়িত করা হয়।
যে কেউ চাইলে ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং একাউন্ট তৈরি করার মাধ্যমে ব্যাংক রিলেটেড কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।
ব্যাংক একাউন্ট কারা তৈরি করতে পারবেন?
যাদের বয়স ১৮ বছরের উর্ধ্বে রয়েছে এবং এরা বাংলাদেশী নাগরিক, তারা বাংলাদেশের যে সমস্ত ব্যাংক রয়েছে সে সমস্ত ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
কোন কোন ব্যাংকে আবার ১৮ বছরের নিচে একাউন্ট তৈরি করতে দেয়। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাংকে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে এবং তার পরে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
কি কি রকমের একাউন্ট তৈরি করা যায়?
আপনি যদি ব্যাংক একাউন্ট তৈরী করতে চান, তাহলে নিশ্চয়ই আপনি চাইলে বিভিন্ন রকমের একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং এই সমস্ত একাউন্টের মাধ্যমে আপনার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনি যদি একক ব্যাংক একাউন্ট তৈরী করতে চান, তাহলে একক ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন কিংবা আপনার কোম্পানীর জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
সে যেই রকমের অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন না কেন, একাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের ক্যাটাগরির যে সমস্ত একাউন্ট রয়েছে যে সমস্ত ক্যাটাগরির মধ্যে আপনি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
যে সমস্ত ব্যাংক একাউন্ট যে কেউ তৈরি করতে পারবেন, সেই সমস্ত ব্যাংক একাউন্টের নাম হলঃ
- কারেন্ট ব্যাংক একাউন্ট।
- সেভিংস ব্যাংক একাউন্ট।
- রিকারিং ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট
- ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট।
যে কেউ চাইলে উপরে উল্লেখিত চারটি প্রকারভেদ এর মধ্যে যেকোনো একটি প্রকারভেদ বেছে নিয়ে তারপরে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং ব্যাংকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
তবে আপনি চাইলে একই ব্যাংকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে বিভিন্ন রকমের একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
বিষয়টা এইরকম যে আপনি যদি ব্যাংকে একটি কারেন্ট একাউন্ট তৈরী করেন, তাহলে একই অ্যাকাউন্ট হোল্ডার একটি সেভিংস একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
এখানে যে প্রথম ২ টি ক্যাটাগরি রয়েছে অর্থাৎ কারেন্ট ব্যাংক একাউন্ট এবং সেভিংস ব্যাংক একাউন্ট, এই দুইটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হচ্ছে সাধারণ ব্যাংক একাউন্ট।
আর বাকি দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হচ্ছে ডিপোজিট ব্যাংক একাউন্ট।
আপনি যদি অ্যাকাউন্ট থেকে ডিপোজিট করতে চান, তাহলে এই দুইটি ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে পারেন।
সে যাই হোক আপনি চাইলে উপরে উল্লেখিত চারটি প্রকারভেদ এর মধ্যে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং এই সমস্ত ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করার মাধ্যমে আপনার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।
একাউন্ট খোলার ভিডিও
আর্টিকেল পড়তে পড়তে অস্বস্তি বোধ করলে নিচে থকে ভিডিও দেখে নিতে পরেন।
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে কেউ সমস্ত ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে, সেটা নির্ভর করবে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রকারভেদ এর উপরে।
অর্থাৎ আপনি কি রকমের ব্যাংক একাউন্ট তৈরী করতে চান? সেই একাউন্ট এর উপর নির্ভর করবে আপনার কিরকম ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে।
তবে যে সমস্ত ডকুমেন্টস প্রায় প্রত্যেকটি ব্যাংক একাউন্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, সে সমস্ত ডকুমেন্ট এর লিস্ট নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করবে এবং নমিনি হিসেবে যে ব্যক্তিকে নির্বাচন করবেন, সেই দুই ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- অ্যাকাউন্ট হোল্ডার এবং নমিনি সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের পরেও, তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র/ ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পাসপোর্ট এর মধ্যে থেকে যেকোনো একটি অনুলিপি তাদের কাছে দিতে হবে।
- একটি সচল মোবাইল নাম্বারের প্রয়োজন হবে।
- এছাড়াও একটি একাউন্ট অপেনিং ফর্ম এর প্রয়োজন হবে। যেটি আপনি ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
- আপনি যদি ব্যবসায়িক কাজের জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান অর্থাৎ বিজনেস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে আপনার বিজনেসের ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে।
মূলত, আপনি যদি উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিতে পারেন। তাহলে আপনি একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হয়, সেগুলো সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা খুব একটি জটিল প্রক্রিয়া নয়। এক্ষেত্রে আপনি যেই ব্যাংকের অধীনে একাউন্ট তৈরী করতে চান, সেই ব্যাংকে চলে যাবেন এবং তারপরে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করবেন।
অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে প্রথমত একটি ব্যাংক বেছে নিতে হবে এবং তারপরে কাগজপত্র নিয়ে সেই ব্যাংকে চলে যেতে হবে।
- যখনই আপনি সেই ব্যাংকে চলে যাবেন, তখন ব্যাংকের যে সমস্ত কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের কাছে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা রিলেটেড ইনফরমেশনগুলো জানিয়ে দিবেন৷
- অ্যাকাউন্ট তৈরি রিলেটেড ইনফরমেশনগুলো যখনই আপনি জানিয়ে দিবেন তখন তারা আপনাকে একটি একাউন্ট অপেনিং ফর্ম দিবে। যা আপনাকে ফিলাপ করে নিতে হবে।
- যখনই আপনি একাউন্ট অপেনিং ফর্ম ফিলাপ করে নিবেন এবং সিগনেচার সহ যাবতীয় বিষয়াদির একাউন্টে যুক্ত করে নিবেন, তখন আপনার একাউন্ট পেন্ডিং অবস্থায় থাকবে।
- ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কিংবা কোন কোন ব্যাংকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে আপনার একাউন্ট একটিভ হয়ে যাবে। একটিভ হয়ে গেলে সেই রিলেটেড একটি কনফার্মেশন এসএমএস আপনার নাম্বারে যথাসময়ে পেয়ে যাবেন।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম। কিংবা একটি ব্যাংক একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় সেই রিলেটেড বিস্তারিত উপরে আলোচনা করা হলো।
অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম কি?
এছাড়াও আপনি যদি ব্যাংক এ গিয়ে একাউন্ট তৈরী করতে ইচ্ছা পোষণ না করেন, তাহলে নিশ্চয়ই অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার দিকে মনোনিবেশ করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি নিশ্চয়ই যে সমস্ত ব্যাংকে অনলাইনে একাউন্ট তৈরী করা যায়, সেগুলোর দিকে নজর আরোপ করতে পারেন।
যে সমস্ত ব্যাংকে অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা সম্ভব, সে সমস্ত ব্যাংকের লিস্ট নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট।
- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ
- আইএফআইসি ব্যাংক
- ব্যাংক এশিয়া একাউন্ট
- মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট
- প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড একাউন্ট
- ঢাকা ব্যাংক একাউন্ট তৈরী
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
- সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড
- ইবিএল ব্যাংক
- ইউসিবি ব্যাংক একাউন্ট
- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
- সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
- সিটি ব্যাংক লিমিটেড
- ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড।
সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত ব্যাংকে আপনি অনলাইনে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি যদি অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।
জেনে নিনঃ অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট তৈরীর নিয়ম
উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটি দেখে নিলে আপনি ঘরে বসে অনলাইনে মাধ্যমে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করার মাধ্যমে আপনার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।
ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে কি টাকা লাগে?
আমাদের মধ্যে অনেকেরই মনের মধ্যে এরকম একটি প্রশ্ন জেগে থাকে, আর সেটি হচ্ছে- গিয়ে ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে কি কোন টাকা পয়সার প্রয়োজন হয়?
এর উত্তর হচ্ছে না। ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করার জন্য কোনোরকমে টাকা পয়সার প্রয়োজন নেই।
তবে আপনি যদি ব্যাংক একাউন্ট একটিভ রাখতে চান, তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আপনাকে টাকা জমা দিতে হবে৷
এক্ষেত্রে আপনি সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা জমা রাখতে পারবেন। এবং আপনি যদি একাউন্টেই সমপরিমাণ টাকা জমা রেখে দেন, তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট পুরোপুরিভাবে একটিভ হয়ে যাবে।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং ব্যাংক একাউন্ট রিলেটেড আরো যে সমস্ত তথ্য রয়েছে যেগুলো আপনাকে জানিয়ে দেয়া প্রয়োজন। সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে উপরে আলোচনা করা হলো।
Banks-bd.com এখন ইউটিউবে!!
নিত্য নতুন ব্যাংকিং রিলেটেড ইউটিউব ভিডিও পাওয়ার জন্য আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভিজিট করতে পারেন৷