আমাদের মধ্যে এরকম অনেকেই রয়েছেন যারা অর্থনৈতিকভাবে সামলম্বী না হওয়ার কারণে, কিস্তিতে মোবাইল নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন।
আপনি যদি কিস্তিতে মোবাইল নিতে চান এবং কিস্তিতে মোবাইল নেয়ার যে সমস্ত ভালো দিক এবং খারাপ দিক সম্পর্কে জেনে নিতে চান, তাহলে এই আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
কিস্তিতে মোবাইল নিতে কি কি লাগবে?
আপনি যদি কিস্তির মাধ্যমে নিতে চান, তাহলে আপনার যে সমস্ত ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে নিচে তুলে ধরা হলো।
- যে কোন কোম্পানি কিংবা ব্র্যান্ড থেকে কিস্তিতে মোবাইল নেওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম নিবন্ধন কিংবা পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে।
- বিশ্বস্ত এবং স্বাবলম্বী একজন গ্যারান্টার নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ আপনি কোনভাবে পালিয়ে গেলে, সেই ব্যক্তিকে জোরজবরদস্তি করে যাতে টাকা গুলো আদায় করা যায়।
- যাকে গ্যারান্টার হিসেবে নির্বাচন করবেন, সেই ব্যক্তির পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হবে।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি লাগবে।
- গ্যারান্টার হিসেবে যে ব্যক্তিকে নির্বাচন করবেন, সেই ব্যক্তি অবশ্যই উপার্জনক্ষম হতে হবে।
- যদি আপনার কাছে উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্ট এবং গ্যারান্টারকৃত ব্যক্তি প্রস্তুত থাকে, তাহলে আপনি কিস্তিতে মোবাইল নেওয়ার জন্য উপযোগী।
এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক কোন কোন ব্র্যান্ড কিংবা কোম্পানি থেকে আপনি কিস্তিতে মোবাইল নিতে পারবেন? এবং মোবাইল নেওয়ার জন্য আপনাকে কিরকম এরিকোয়ারমেন্ট মেনে চলতে হবে?
কোথা থেকে কিস্তিতে মোবাইল পাওয়া যাবে?
জানা-অজানা এরকম অনেক সোর্স হয়েছে, যে সমস্ত সোর্স থেকে আপনি কিস্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন ক্রয় করতে পারবেন।
তবে এগুলোর মধ্যে থেকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত যে চারটি সোর্স রয়েছে, সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
- Daraz- ডারাজ।
- Walton- ওয়ালটন।
- RobiShop – রবিশপ।
- Grameenphone – গ্রামীণফোন।
এই চারটি সোর্স থেকে আপনি আপনি চাইলে কিস্তিতে মোবাইল ক্রয় করতে পারবেন।
কিস্তিতে মোবাইল কিভাবে কিনবেন?
উপরে উল্লেখিত চারটি সোর্স থেকে আপনি চাইলে কিস্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন ক্রয় করতে পারবেন।
এই চারটি সোর্স মোবাইল ফোন ক্রয় করার ক্ষেত্রে, আপনাকে নিম্নলিখিত নির্দেশ গুলো মেনে চলতে হবে এবং নিম্নলিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী আপনি চাইলে ফোন নিতে পারবেন।
আপনি যদি একটি মোবাইল ফোন ক্রয় করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রথমত ২০ থেকে ৬০ পার্সেন্ট ডাউন পেমেন্ট করতে হবে।
সহজ বাংলা বলতে গেলে, একটি মোবাইল ফোনের দাম যদি ৬০০০ টাকা হয় তাহলে সর্বনিম্ন ১২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৬০০ টাকা পরিশোধ করে, এটি নিজের করে নিতে হবে।
নির্দিষ্ট পরিমান টাকা পরিশোধ করার পরে যত টাকা বাকি থাকবে, সেই টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করে নিতে হবে।
নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনি কত মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করবেন, সেটি আপনার ব্র্যান্ড কর্তৃক নির্ধারিত হবে। তারা এটি নির্ধারণ করে দেবে।
কোন কারণে আপনি যদি এক টানা কয়েক মাস কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে মোবাইল ফোন ফেরত যোগ্য হবে কিংবা গ্যারান্টার কাছ থেকে টাকা ফেরত যোগ্য হবে।
মোবাইল ফোন কালেক্ট করে নেয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই যেকোনো একটি কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে চলে যেতে হবে। এবং তার পরে তাদেরকেই সম্পর্কে অবগত করতে হবে।
যখন আপনি তাদেরকে এই সম্পর্কে অবগত করবেন এবং নির্দিষ্ট কাগজপত্র তাদেরকে দিয়ে দিবেন, তখন মোবাইল ফোন নেয়া রিলেটেড যে সমস্ত বিষয়বস্তু রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে অবগত হতে পারবেন।
দারাজ থেকে কিস্তিতে মোবাইল
দারাজ থেকে আপনি চাইলে কিস্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন ক্রয় করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে তারাদের যে ওয়েব প্রোগ্রাম রয়েছে, সেখানে গিয়ে, কিস্তিতে মোবাইল ফোন ক্রয় করার যে ইনফর্মেশন রয়েছে, সেগুলো দেয়ার মাধ্যমে মোবাইল ফোন ক্রয় করে নিতে পারবেন।
এই ওয়েব পোর্টাল থেকে আপনি যদি মোবাইল ফোন ক্রয় করতে চান, তাহলে সর্বনিম্ন তিন মাস থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১২ মাস মেয়াদী কিস্তিতে দিয়ে ফোন ক্রয় করে নিতে পারবেন।
যখন আপনি টাকা ফেরত দিবেন, তখন ০% ইন্টারেস্ট প্রযোজ্য হবে।
ওয়ালটন থেকে কিস্তির মাধ্যমে মোবাইল
এছাড়াও আপনি চাইলে ওয়ালটন থেকেও কিস্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন ক্রয় করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনার আশেপাশে যে ওয়ালটনের শোরুম রয়েছে, সেখানে চলে যেতে পারেন এবং তার পরে তাদেরকে এই সম্পর্কে অবগত করতে পারেন।
আশেপাশে যদি শোরুম না থাকে, তাহলে তাদের হেল্পলাইন নাম্বারে কল করার মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
তাদের যে হেল্পলাইন নাম্বার রয়েছে, সেটি নিচে মেনশন করা হলো।
১৬২৬৭ অথবা ০৯৬১২৩১৬২৬৭
রবি শপ থেকে মোবাইল ক্রয়
এছাড়াও আপনি যদি রবি সবথেকে মোবাইল ফোন করে করেন তাহলে তিন মাস থেকে ৩৬ মাস কিস্তিতে মোবাইল ফোন ক্রয় করতে পারবেন।
এখান থেকে মোবাইল ফোন ক্রয় করার ক্ষেত্রে ব্যাংকের যে ইএমআই ডিটেইলস রয়েছে, সেটি সম্পর্কে নিচে আলোকপাত করা হলো।
রবিশপে বিভিন্ন ব্যাংকের EMI Details
Bank | No of EMI |
BRAC | 36 |
EBL | 24 |
SCB | 24 |
Dhaka Bank | 12 |
UCB | 24 |
Trust Bank Limited | 36 |
DBBL | 24 |
Mutual Trust Bank | 36 |
Bank Asia | 24 |
LankaBangla | 36 |
SBAC Bank | 24 |
উপরে উল্লেখিত লিস্টে যে ইএমআই ডিটেলস রয়েছে, সেটি স্ব-স্ব ব্যাংক থেকে টাকা পরিশোধ করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
গ্রামীণফোন থেকে কিস্তিতে মোবাইল
এছাড়াও আপনি যদি কিস্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন করার পরে নিতে চান, তাহলে আপনার আরেকটি সহকারী হতে পারে গ্রামীণফোন।
গ্রামীণফোন থেকে আপনি যদি কিস্তিতে মোবাইল ফোন করে করতে চান, তাহলে গ্রামীণফোনের যে অফিশিয়াল শোরুম রয়েছে সেখানে চলে যেতে পারেন কিংবা গ্রামীণফোন স্টোর থেকে এটি ক্রয় করে নিতে পারেন।
কিস্তিতে মোবাইল ফোন নেয়া কি ঠিক হবে?
প্রথমত আপনি যদি মুসলমান ধর্মালম্বী হয়ে থাকেন, তাহলে কিস্তিতে মোবাইল নেয়া থেকে ১০০ হাত দুরে থাকেন। কারণ এক্ষেত্রে সুদ বা ইন্টারেস্ট এর সাথে আপনি জড়িত হতে পারেন।
তবে যেকোনো রকমের ধর্মাবলম্বীর মানুষের এই সমস্ত কিস্তিতে জড়ানো উচিত হবে না। কারণ এটি আপনাকে শুধু দিনদিন গরিব করে তুলবে, কখনো আপনাকে ধনী বানাতে পারবে না।
এছাড়াও কুরআনে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে সুদকে হারাম করা হয়েছে এবং ব্যবসা করা হয়েছে হালাল।
আপনি চাইলে নিম্নলিখিত কুরআনের আয়াতে দেখে নিতে পারেনঃ-
হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩০)
যারা সুদ খায়, তারা তার ন্যায় (কবর থেকে) উঠবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয়। এটা এ জন্য যে, তারা বলে, ব্যবসা তো সুদের মতই। অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৭৫)
তবে সে যাইহোক আপনি যদি মোবাইল ফোন করে করতে চান তাহলে সবর করুন, এবং টাকা জমিয়ে তারপরে মোবাইল ফোন ক্রয় করার চিন্তা ভাবনা করুন।
তারপরেও, কিস্তিতে মোবাইল ফোন ক্রয় করার ক্ষেত্রে ১০০ হাত দূরে থাকুন।
আপনি যদি Rfl কোম্পানিতে মোবাইল বেচা কেনার ব্যবসা করতে চান, তাহলে নজর রাখতে পারেন, Rfl web do
Banks-bd.com এখন ইউটিউবে!!
নিত্য নতুন ব্যাংকিং রিলেটেড ইউটিউব ভিডিও পাওয়ার জন্য আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভিজিট করতে পারেন৷