আপনি যদি ব্যাংকিংখাতের সাথে সম্পৃক্ত হোন, তাহলে নিশ্চয়ই কোন একবার ডিপিএস শব্দটির কথা শুনেছেন। যদি শুনে থাকেন তাহলে ডিপিএস কি? এটি কি কাজে লাগে?
এই আর্টিকেলের বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে ডিপিএস কি এবং ডিপিএস রিলেটেড আরো যে সমস্ত বিষয়াদি রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
ডিপিএস কি?
একেবারে সহজ বাংলায় বলতে গেলে এটা বলতে হবে যে, আপনি যদি কোনো ব্যাংকের অধীনে কোনো টাকা সঞ্চয় করতে চান, তাহলে সেই টাকা সঞ্চয় করার বিষয়টিকে ডিপিএস বলা হয়।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংকের বিভিন্ন রকমের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এবং বিভিন্ন রকমের নাম দিয়ে এই অ্যাকাউন্টটি কে মেনশন করা হয়।
তবে প্রত্যেক ব্যাংকেই অন্য যেকোন নাম দেয়া হোক না কেন, তার শেষে ডিপিএস শব্দটি কিংবা ডিপোজিট শব্দটি মেনশন করে থাকে।
এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন অনুসারে ডিপোজিট একাউন্টের যে প্ল্যান রয়েছে, সেই প্ল্যান পরিবর্তন করতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী টাকা জমাতে পারেন।
কথাটি যদি আবার রিপিট করতে হয় তাহলে এভাবে বলতে হবে যে, আপনি যদি যেকোনো ব্যাংকের অধীনে টাকা জমাতে চান তাহলে যে একাউন্টের মাধ্যমে টাকা জমাতে পারবেন, সেটিকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট কিংবা ডিপোজিট একাউন্ট বলা হবে।
ডিপিএস করতে কি কি লাগে
আপনি যদি ডিপিএস এর সংজ্ঞা জেনে যান, তাহলে এবার নিশ্চয়ই এটা জানতে চাইবেন যে ডিপিএস করতে কি কি লাগে?
যেকোনো একটি ব্যাংকে আপনি যদি ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান কিংবা ডিপোজিট একাউন্ট তৈরী করতে চান, তাহলে একাউন্ট করতে কিছু ডকুমেন্ট তাদের কাছে দিতে হবে।
অর্থাৎ যেই ব্যাংক একাউন্টে ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট তৈরি করে না কেন, প্রত্যেক ব্যাংকে প্রায় একই রকমের কাগজপত্র প্রয়োজন হয়।
এক্ষেত্রে প্রথমত আপনি যত টাকা ডিপোজিট করতে চান সেই টাকার এমাউন্ট এর এর যে ডিপোজিট প্ল্যান রয়েছে সেই প্ল্যান সংগ্রহ করে নেয়ার পরে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার দিকে মনোনিবেশ করতে পারেন।
ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে মেনশন করা হলোঃ
- যেকোনো ব্যক্তি ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চাইবে, ওই ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের বেশি কিংবা ১৮ বছরের কম হলেও সমস্যা নেই।
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চাইবে, সেই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির মধ্যে থেকে যেকোনো একটি ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে।
- এছাড়াও যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চাইবেন, ওই ব্যক্তির সদ্য তোলা এক কপি ছবি এর প্রয়োজন হবে।
- একাউন্ট তৈরি করার জন্য একজন নমিনি প্রয়োজন হবে। যার ন্যাশনাল আইডি কার্ড এবং এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- আপনারা আয়ের সোর্স এর প্রমান দিতে হবে অর্থাৎ আপনার সর্বশেষ ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর প্রয়োজন হবে।
- অনেকক্ষেত্রে ইউটিলিটি বিল এর প্রয়োজন হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এটার প্রয়োজন নাও হতে পারে।
পরিশেষে একাউন্ট তৈরি করার জন্য একটি একাউন্ট অপেনিং ফর্ম এর প্রয়োজন হবে। যেই একাউন্ট অপেনিং ফর্ম এর মাধ্যমে আপনি একাউন্ট তৈরী করে নিতে পারবেন।
বাংলাদেশের যতগুলো ব্যাংক রয়েছে প্রত্যেক ব্যাংকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায় এবং প্রত্যেক ব্যাংকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করা খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া।
উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট সাথে নিয়ে গেলেই আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন মেয়াদে একটি ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
ডিপিএস কি হারাম?
ডিপিএস অ্যাকাউন্ট হারাম হবে নাকি হালাল হবে সেটা সম্পূর্ণ পক্ষে নির্ভর করবে আপনার ব্যবহার এর উপরে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি একাউন্ট থেকে টাকা জমিয়ে তারপরে মেয়াদশেষে লাভ্যাংশ গ্রহণ করেন, তাহলে সেটি হারাম হবে বলে অনেক আলেমের অভিমত রয়েছে।
আপনি যদি টাকাগুলো হালাল খেতে যান, তাহলে আপনার আসল টাকা যেগুলো আপনি ব্যাংকে জমা রাখবেন, সেগুলো মেয়াদ শেষে তুলতে পারেন।
এবং এখান থেকে আপনাকে যে সমস্ত লাভের টাকা দেয়া হবে কিংবা সুদ দেয়া হবে সেগুলো নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলেই আপনার টাকা পবিত্র থাকবে।
প্রায় প্রত্যেক ব্যাংকে এই সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় যে আপনি চাইলে আপনার আসল টাকাগুলো নিতে পারবেন এবং লাভ্যাংশ টাকা তাদের কাছে রেখে দিতে পারবেন।
পরে এই টাকা কোন ফাউন্ডেশনে সেগুলো দান করে দেবে।
পরিশেষে এককথায় বলতে গেলে এটা বলতে হবে যে, আপনি যদি ব্যাংক কর্তৃক যে কোনো রকমের সুদের কারবার এর সাথে জড়িত হন, তাহলে সেটা অবশ্যই হারাম হিসাবে বিবেচিত হবে।
তবে আপনি যদি সুদ এড়িয়ে চলতে পারেন, তাহলে আশা করা যায় আপনি বেঁচে যেতে পারেন। ইনশাআল্লাহ।
উপরে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিপিএস কি? কিভাবে ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করবেন? সেই রিলেটেড বিস্তারিত।
ফটো ক্রেডিটঃ পিক্সেল.কম।
Banks-bd.com এখন ইউটিউবে!!
নিত্য নতুন ব্যাংকিং রিলেটেড ইউটিউব ভিডিও পাওয়ার জন্য আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভিজিট করতে পারেন৷